দেশের উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে নর্দান ইলেকট্র্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেড। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার মানুষকে বিদ্যুৎসেবা দেওয়ার দায়িত্ব তাদের। উত্তরের জেলাগুলোয় গত কয়েক দিনে বিদ্যুতের লোডশেডিং তীব্র আকার ধারণ করেছে। রাজশাহীর শহরের কিছু এলাকায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।
বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট।তার মধ্যে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা ১১ হাজার ৪৫০ মেগাওয়াট।এখন এই কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন এক তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বৃদ্ধির কারণে সরবরাহ বন্ধ রাখায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও। ফলে বেড়েছে লোডশেডিং।
গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশ থেকেই লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাস সংকটের কারণে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। আর এই পরিস্থিতি থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যাচ্ছে না বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে, এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সূত্র মতে, গত এক বছর ধরেই বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম ওঠানামার মধ্যে ছিল। এর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ জ্বালানির দাম আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে বাড়ছে এলএনজির দামও।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েক মাস আগে এলএনজি কেনার জন্য কাতারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। কিন্তু চুক্তির বাইরে এলএনজি দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয় কাতার সরকার। এরপর দেশে মজুত থাকা এলএনজি কমতে শুরু করে।
সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, এলএনজি আমদানি কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন গত কয়েকদিনে এক তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। অন্যদিকে, জ্বালানি তেলের দামও বাড়তি। এতে দিনে ১০৮ কোটি টাকা লোকসান গুনছে বিপিসি। তাই তেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রও পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
এদিকে, লোডশেডিংয়ের প্রভাব গ্রামাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি পড়ছে বলে যানা যাচ্ছে।ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক সময় নির্ধারণ করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।